বেশতো সাইট টিতে কোনো কন্টেন্ট-এর জন্য বেশতো কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়।
কনটেন্ট -এর পুরো দায় যে ব্যক্তি কন্টেন্ট লিখেছে তার।
বাংলাদেশ তথা ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথিতযশা স্থপতি মাজহারুল ইসলাম। বাংলাদেশের স্থাপত্য পেশাচর্চার পথিকৃৎ মাজহারুল ইসলাম। বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের প্রথম সভাপতি ছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এ স্থপতি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণসহ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রগতিশীল আন্দোলন ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। প্রখ্যাত এ স্থপতি ২০১২ সালের ১৫ জুলাই(১৪ জুলাই শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ৬ মিনিটে) রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় প্রয়াণ।স্থপতি মাজহারুল ইসলাম ব্রিটিশ ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার সুন্দরপুর গ্রামে ১৯২৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। স্থপতি মাজহারুল ইসলাম ব্রিটিশ ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার সুন্দরপুর গ্রামে ১৯২৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন।মাজহারুল ইসলামের বাবা ওমদাতুল ইসলাম ছিলেন কৃষ্ণনগর কলেজের অংকের শিক্ষক। কৃষ্ণনগর কলেজ স্কুলে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ার পর বাবার বদলির সুবাদে রাজশাহীতে চলে যান। রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল ও রাজশাহী কলেজ থেকে যথাক্রমে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর ওই কলেজ থেকেই পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক পাস করেন। ১৯৪৬ সালে শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে প্রকৌশলবিদ্যায় পাস করেন। দেশভাগের পর ১৯৪৭ সালে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। মাজহারুল ইসলাম ১৯৫০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অরিগন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থাপত্যের পাঠ নিয়ে আড়াই বছর পর দেশে ফেরেন। দেশে ফিরে ছয় মাসের পরিশ্রমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট ও লাইব্রেরি ভবনের নকশা করেন। ১৯৫৬ সালে বৃত্তি নিয়ে তিনি ট্রপিক্যাল আর্কিটেকচার পড়তে লন্ডনের এএ স্কুল অব আর্কিটেকচারে যান। ১৯৬০ সালে পল রুডল্ফের ইয়েল ইউনিভার্সিটির অধীনে মাস্টার্স করতে যান। ১৯৬১ সালের শেষের দিকে মাজহারুল ইসলাম দেশে ফিরে আসেন। পূর্ব পাকিস্তানের কনস্ট্রাকশন, বিল্ডিং এ্যান্ড ইরিগেশনে কাজ নেন। মতের মিল না হওয়ায় ১৯৬৪ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে প্রকৌশলী শেখ মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সঙ্গে ‘বাস্তুকলাবিদ’ নামে একটি স্থাপত্য উপদেষ্টা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপত্য অনুষদ চালু করার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখেন তিনি। এখানে খণ্ডকালীন শিক্ষকতাও করেছেন। মাজহারুল ইসলামের উল্লেখযোগ্য নকশার মধ্যে রয়েছে—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট (১৯৫৩-৫৪), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি ভবন (১৯৫৩-৫৪), খিলগাঁও রেলওয়ে পুনর্বাসন প্রকল্প (১৯৬৩-৬৪), নতুন রাঙ্গামাটি শহর পরিকল্পনা (১৯৬৩-৬৪), চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের জন্য আবাসন প্রকল্প, আজিমপুর (১৯৬২), বিসিএসআইআর লাইব্রেরি ভবন, ঢাকা (১৯৬৩-৬৫), কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন, মতিঝিল (১৯৬৫-৭১), জীবন বীমা ভবন, মতিঝিল (১৯৬৫-৭১) বিদেশী স্থপতি স্ট্যানলি টাইগারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, সিলেট ও বরিশালের জন্য পাঁচটি পলিটেকনিক ইনিস্টিটিউট (১৯৬৫-৭১), সড়ক গবেষণা পরীক্ষাগার, ঢাকা (১৯৬৫-৭১), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মাস্টার প্ল্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ভবন (১৯৬৮-৭১), রূপপুরে আনবিক শক্তি কমিশনের আবাসন প্রকল্প (১৯৬৮-৭১), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় মাস্টার প্ল্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ভবন (১৯৬৮-৭১), জয়পুরহাট কয়লা ও সিমেন্ট প্রকল্প (১৯৮০-৮৪), জাতীয় গ্রন্থাগার ও জাতীয় আর্কাইভ ভবন, শেরে বাংলা নগর (১৯৮০-৮৪), বিশ্বব্যাংক অফিস ভবন, ঢাকা (১৯৮৭) ও ২০ তলা ‘গার্ডেন সিটি’ প্রকল্প, ঢাকা (১৯৯৫)।



