বেশতো সাইট টিতে কোনো কন্টেন্ট-এর জন্য বেশতো কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়।
কনটেন্ট -এর পুরো দায় যে ব্যক্তি কন্টেন্ট লিখেছে তার।
( ৬,৩০২ বার দেখা হয়েছে)
আবদুল বাতেন গোবেচারা টাইপের মানুষ।
মহাগুরু
আমাদের শরীরের রক্ত বা তরল আসলে লবনাক্ত, অর্থাৎ এতে সোডিয়ামের পরিমান বেশি থাকে। কোষের বাইরের তরলে প্রতি লিটারে ১৩৫ থেকে ১৪৫ মিলিমোল সোডিয়াম থাকে। অর্থাৎ সেখানে সোডিয়ামের পরিমান বেশি। আর এই সোডিয়াম দেহের তরলের ভারসাম্য বজায় রাখা থেকে শুরু করে স্নায়ু-রক্তনালির কার্যকারিতা এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
মানবদেহের রক্তে সোডিয়াম বা লবণের মাত্রা কমে গেলে বমি ভাব, নিস্তেজ ভাব, দুর্বলতা, অসংলগ্ন কথাবার্তা, চিন্তাভাবনা থেকে শুরু করে খিঁচুনি ও অজ্ঞান হয়ে পড়ার মতো জটিলতা দেখা দিতে পারে। লবণের ঘাটতি সামান্য হলে উপসর্গও হয় কম, বেশি হলে রোগী অচেতন হয়ে যেতে পারে।
রক্তে সোডিয়াম বা লবণের মাত্রা কমে যাওয়ার কিছু কারণ:
১. কোনো কারণে শরীর থেকে তরল বেরিয়ে গেলে রক্তে লবণ-পানি সব কিছুই কমে যেতে পারে।
২. ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে।
৩. অধিক বমি হলে।
৪. অত্যধিক কায়িক পরিশ্রম করলে।
৫. শরীরচর্চা বা রোদের মধ্যে খেলাধুলা করার কারণে শরীর অত্যধিক ঘেমে গেলে শরীরে রক্তে লবণের মাত্রা কমে যেতে পারে।
৬. গরম বা অন্য কোন কারণে অত্যধিক ঘামের ফলে শরীর থেকে প্রচুর তরল বেরিয়ে গেলে।
৭. অপর্যাপ্ত খাদ্য এবং ভিটামিনের অভাবে।
৮. বেশি ডায়েট কন্ট্রোল করলে।
৯. কোনো কারণে প্রস্রাবের সঙ্গে বেশি লবণ বেরিয়ে গেলেও লবণের ঘাটতি হতে পারে।
১০. কিডনির নানা সমস্যা ও কিছু ওষুধের (যেমন: ডাইইউরেটিক) কারণে প্রস্রাবের সঙ্গে লবণ বেরিয়ে যেতে পারে।
১১. কিডনি, হৃদ্যন্ত্র বা যকৃতের সমস্যা থাকলে, দেহ সঠিকভাবে পানি নিষ্কাশন করতে পারে না, ফলে দেহে পানি জমে লবনের ঘনত্ব কমে যায়।
১২. অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির সমস্যায়, থাইরয়েডের সমস্যায় লবণ কমে।
১৩. মস্তিষ্কে আঘাতজনিত কারণে, সংক্রমণে, টিউমারে বা স্ট্রোকের পর মস্তিষ্ক থেকে তরল ও লবণের ভারসাম্য রক্ষাকারী হরমোন এডিএইচ নিঃসরণে ঝামেলা হলেও লবণ কমে যেতে পারে।
প্রতিরোধ:
রোগের প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ সব সময়ই উত্তম। লবণ বা সোডিয়াম যাতে না কমে যায় তার জন্য কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা-
১. শরীরে পানি ও লবণের অভাব যাতে না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে, বিশেষ করে গরমে।
২. পানি ও লবণের ঘাটতি পূরণে প্রচুর পরিমাণে পানি, স্যালাইন, লেবুর শরবত, ফলের রস ইত্যাদি বেশ সহায়ক।
৩. গরমে খুব বেশি চা বা কফি পান না করে স্বাভাবিক বা ঠান্ডা পানীয় বেশি পান করা উচিত।
৪. ডায়রিয়া বা বমির মাধ্যমে তরল বেরিয়ে গেলে লবণ-পানির স্যালাইন খেয়ে বা শিরায় দিয়ে এই ঘাটতি পূরণ করতে হয়।
৫. ব্যায়ামের পর পানি গ্রহণ করার আগে শরীর ঠাণ্ডা করে আনা হলে তা শরীরে পানি ধরে রেখে ইলেকট্রোলাইটিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
৬. ম্যাগনেশিয়াম সালফেট মিশ্রিত ঈষদুষ্ণ পানিতে গোসল করলে তা ত্বকের মাধ্যম্যে সরাসরি শরীরে প্রবেশ করে।
৭. উচ্চমাত্রার শরীরচর্চার ক্ষেত্রে বিশেষ করে খেলোয়াড়দের প্রতি ১৫-২০ মিনিট পরপর পটাশিয়াম ও সোডিয়াম মিশ্রিত পানীয় পান করা উচিত।
প্রতিকার:
রক্তে লবণের অনুপাত বুঝতে চিকিৎসকেরা যে পরীক্ষা করেন তার নাম সিরাম ইলেকট্রোলাইটস। বয়স্ক ব্যক্তিরা বেশি এই ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। কমে যাওয়া লবণ আবার খুব দ্রুত বাড়ানোর কাজটাও সমস্যা। এতে মস্তিষ্কের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। তাই লবণ পরীক্ষা করে (রক্তের ইলেকট্রোলাইট) ধীরে ধীরে সঠিক মাপের ও সঠিক ধরনের স্যালাইনের মাধ্যমে লবণের মাত্রা আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হয়। হাসপাতালে ভর্তি রেখেই এটা করতে হবে। লবণ কমে যাওয়ার কারণ বের করে তার চিকিৎসাও দিতে হবে।
মোহাম্মেদ আবুল কাশেম অত্যান্ত নগন্য মানুষ
মহাগুরু
রক্তে হঠাৎ লবণ ঘাটতি?
রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে নিয়ে অনেক সময়ই চিকিৎসককে বলতে শোনা যায়—রোগীর রক্তে লবণ কমে গেছে! এবার স্যালাইনের মাধ্যমে লবণ ভরতে হবে।
শরীরে লবণ কোথা থেকে আসে, কতটুকু থাকে আর কেনই বা কমে যায়? কমে গেলেই বা কী এমন ক্ষতি? আমাদের শরীরে রক্ত বা তরল আসলেই লবণাক্ত। তার মানে এতে সোডিয়ামের পরিমাণ বেশি। কোষের বাইরের তরলে সোডিয়ামের পরিমাণ বেশি—প্রতি লিটারে ১৩৫ থেকে ১৪৫ মিলিমোল। আর এই সোডিয়াম দেহের তরলের ভারসাম্য বজায় রাখা থেকে শুরু করে স্নায়ু-রক্তনালির কার্যকারিতা এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
কেন লবণ কমে যায়?
কোনো কারণে শরীর থেকে তরল বেরিয়ে গেলে রক্তে লবণ-পানি সব কিছুই কমে যেতে পারে। যেমন খুব বমি বা পাতলা পায়খানা হলে, খুব ঘাম হলে বা লবণ-পানি বেরিয়ে যায় এমন ওষুধ সেবন করলে। আবার কোনো কারণে দেহে অতিরিক্ত তরল জমে গেলে লবণের ঘনত্ব কমে গিয়ে বিপত্তি ঘটে। কিডনি, হৃদ্যন্ত্র বা যকৃতের সমস্যায় দেহ সঠিকভাবে পানি নিষ্কাশন করতে পারে না বলে দেহে পানি জমে যায় এবং লবণের ঘনত্ব কমে যায়। মস্তিষ্কে আঘাতজনিত কারণে, সংক্রমণে, টিউমারে বা স্ট্রোকের পর মস্তিষ্ক থেকে তরল ও লবণের ভারসাম্য রক্ষাকারী হরমোন এডিএইচ নিঃসরণে ঝামেলা হলেও লবণ কমে যেতে পারে।
লবণ কমে গেলে কী হয়?
সোডিয়াম দেহের রক্তচাপ, তরলের ভারসাম্য, স্নায়ু ও মস্তিষ্কের কার্যকারিতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই হঠাৎ রক্তে সোডিয়াম কমে গেলে মস্তিষ্কের তরলে ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। ফলে মাথা ব্যথা, দুর্বলতা, তন্দ্রাচ্ছন্নতা, চেতনা কমে যাওয়া, উল্টাপাল্টা আচরণ, এমনকি খিঁচুনি হতে পারে। রোগী অজ্ঞান হতে পারেন বা কোমায় চলে যেতে পারেন।
কী করা যায়?
রক্তে লবণের অনুপাত বুঝতে চিকিৎসকেরা যে পরীক্ষা করেন তার নাম সিরাম ইলেকট্রোলাইটস। এতে সমস্যা পাওয়া গেলে ধীরে ধীরে বিচক্ষণতার সঙ্গে লবণের স্বাভাবিক পরিমাণ ফিরিয়ে আনা হয়। খুব দ্রুত লবণের পরিমাণ পরিবর্তন করলেও মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে এবং রোগী এমনকি চিরদিনের জন্য অক্ষম হয়ে পড়তে পারেন। তাই কোন স্যালাইন কী পরিমাণে কতক্ষণ ধরে দিতে হবে, তা অভিজ্ঞ চিকিৎসকের ওপরই ছেড়ে দিতে হবে।